Money Heist সহ প্রায় সব বিখ্যাত সিরিজই দেখেছি

ওয়েবসিরিজ রিভিউঃ পৃথিবীর আন্ডাররেটেড তিনটা ওয়েবসিরিজের লিস্ট করুন। কারও লিস্টে হয়তো থাকবে Better Call Saul, কারও লিস্টে থাকবে Umbrella Academy অথবা Ozark. কিন্তু আমার বিশ্বাস ৭০% এর লিস্টে যে ওয়েবসিরিজটার নাম থাকবে, সেটা হচ্ছে Alice in borderland নামটি। পৃথিবীর সবচেয়ে আন্ডাররেটেড ওয়েবসিরিজ Alice in Borderland যে এটা অনেকেই হয়তো একমত হবেন। যখন নেটফ্লিক্সে Squid Game প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়।

তখন অনেকেই বলতে থাকে Squid Game এর মতো আরেকটা সিরিজ আছে, সেটা হচ্ছে Alice in Borderland (সংক্ষেপে ধরছি AIB)। এরপরে AIB সিরিজটির প্রতি আমার আগ্রহ জন্মে। কিন্তু দেখার পর আমি বিস্মিত হই, AIB এর কাছে Squid Game কিছুই না। আমি ক্ষমা চাচ্ছি যারা Squid Game এর অনেক বড় ভক্ত। AIB যে Squid Game এর চেয়ে অনেক উচ্চলেভের একটা সিরিজ, তারা না দেখলে আসলেই উপলব্ধি করতে পারবেননা।

Squid Game এও তো খেলার নিয়ম স্পষ্ট করে বলা আছে। কিন্তু AIB এর অনেক গেমের নিয়ম সরাসরি বলাও হয়না। বুদ্ধি অনুমান করে, নানাধরণের ক্যালকুলেশন করে বুঝে নিতে হয়। না বুঝলেও মাঝেমধ্যে করার কিছুই থাকেনা। তবে জিতলেও মুক্তি আছে কি নেই সেটাও ক্লিয়ার করা হয়না। শুনেছি সিনেমাটায় অনেক ভায়োলেন্স আছে? আপনারা অনেকেই টাইটানিক সিনেমাটি দেখেছেন। সেখানে নগ্নটা ছিলো।

কিন্তু কাহিনী এবং পরিচালনার জাদুকরীতে সেই নগ্নতা আমাদের ভিতর বিরুপ প্রভাব ফেলতে পারেনি। তেমনি AIB তে ভায়োলেন্স থাকলেও, কাহিনীর গাঁথুনি, চরিত্রের বিন্যাস, মন মুগ্ধকর ক্যালকুলেশন এসব আপনাকে অভারলুক করতে সাহায্য করাবে ভায়োলেন্স থেকে। এখানে যে শুধু খেলাই আছে তা নয়। দর্শন আছে, কিছু সৎ মানুষের গুরুত্বের ব্যাখ্যা আছে। সিরিজের কোনও পর্বই প্রেডিক্ট করা যায়না।

Money Heist সহ প্রায় সব বিখ্যাত সিরিজই দেখেছি

জাপানি প্রচন্ড মেধাসম্পন্ন এই সিরিজটি ১৬ টি পর্বের। সিরিজটি প্রথম ১৫ পর্ব খেলবে সিরিজের চরিত্রদের সাথে, কিন্তু শেষের পর্বটি খেলবে আপনার ব্রেনের সাথে। ফুটবল যেমন লাত্থিয়ে লাত্থিয়ে খেলে। শেষের পর্বটি আপনার ব্রেনে দিয়েই বলা যায় লাত্থিয়ে লাত্থিয়ে খেলবে। আমি Breaking Bad দুইবার দেখেছি, Money Heist সহ প্রায় সব বিখ্যাত সিরিজই দেখেছি। কিন্তু AIB এর মতো এত্ত দারুণ শেষ পর্ব আমি পাইনি। এই সিরিজটির একটাই নেগেটিভ জিনিস আমার কাছে লাগলো, সেটা হচ্ছে AIB দেখার পর দীর্ঘদিন অন্য কোন সিরিজ ভালো লাগবেনা। সিরিজটি এখনও যেন চোখে লেগেই আছে।
IMDB Rating 7.7/10
আমার পার্সোনাল রেটিং 10/10.

মাথা হ্যাং করা এক সিরিজের গল্প শুনবেন?

গেইম বেউজড সিরিজের কথায় যদি আসে তাহলে আমার প্রথম অবস্থানে পছন্দ ছিল Squid Game কিন্তু Alice in Borderland যেই অবস্থান চুরমার করে দিয়ে বহু এগিয়ে গেছে। Squid Game ২য় সিজনে কি করে জানি না। তবে Alice in Borderland এমন এক সিরিজ যেটা মিস করা মানে অন্য লেভেলের কিছু মিস করা। এগুলো হচ্ছে সত্যিকারের ক্রিয়েটিভিটি। Money Heist এর সাথে এটা মিলানো উচিত হবে না তবে আমি বলবো Alice in Borderland ওটাকেও ছাড়িয়ে গেছে।

Series: ” Alice in Borderland ” (Season 1+2)
Director: Shinsuke Sato
Cast: Kento Yamazaki,Tao Tsuchiya Etc
Country: Japan
Genre : Survival,Science Fiction,Thriller

ঘন্টার পর ঘন্টা চলছে কিন্তু বিন্দু পরিমাণ ও বিরক্ত লাগছে না। গেইম গুলো জাস্ট মাথা ঘুরানো আর চোখ ধাধানো ছিল। মেকিং, প্রেজেন্টেশন লা জবাব। শেষটা এমন হবে সেটা আমি আগেই ধারণা করেছিলাম কারন এই থিমের ওপর বেইজড করে আমিও একটা গল্পের সিরিজ লিখেছিলাম। গেইম গুলো দেখার জন্য হলেও অন্তত সিরিজটি দেখা উচিত। শুধুযে গেইম রয়েছে এমন না। বন্ধুত্ব,ভালোবাসা,মায়া সবকিছুই ফুটিয়ে তুলেছেন পরিচালক এটার মাধ্যমে। আউটস্ট্যান্ডিং ইউনিক গল্প এবং গেইম গুলো।

অভিনয়ের কথা যদি বলতে হয় আরিসু আর ওস্তাগি জাস্ট আগুন। হাফ প্যান্ট আর টিশার্ট পড়ে এই লেভেলের মাথা হ্যাং করা একটা সিরিজ শেষ করে দিল। আমাদের দেশে হলে নায়কের ড্রেস খরচই থাকতো মূল বাজেটের ৫০%। ওস্তাগি আগুন ছিল। তবে আমার কাছে আরিসু বেস্ট। এছাড়াও অন্যান্য যারা ছিল দারুণ অভিনয় করেছে। ৮+৮=১৬ টি এপিসোড টোটাল ২টি সিজনে। জাস্ট আগুন একটা সিরিজ। গুড নিউজ হচ্ছে হিন্দি ডাব রয়েছে। পরিবার নিয়ে দেখতে পারেন তবে বন্ধুবান্ধব ভাইবোন অথবা কাজিনরা মিলে একসাথে দেখলে বেশি মজা পাবেন।

প্রথম সিজনকে হারিয়ে দিয়েছিল Squid Game

পরিশেষে একটা কথাই বলবো, মুভি এবং সিরিজে কোরিয়ানরা বেস্ট সেটারই প্রমাণ রেখেছিল ” Squid Game “.. ২০২০ সালের ” Alice in Borderland ” এর প্রথম সিজনকে হারিয়ে দিয়েছিল ” Squid Game কিন্তু ” Alice in Borderland ” এর ২য় সিজন এর মাধ্যমে জাপানিজরা আবার তার অবস্থান ফিরিয়ে নিল। জাপান দেখিয়ে দিল তারাও কিছুতে কম না। এখন দেখার বাকি ” Squid Game ” স্ট্রং ফিডব্যাক দিতে পারে কি না!

আরোও দেখুন>>>

আমি নিজে একজন লেখক তাই এই সিরিজের ট্যালেন্ট ৩ জন রাইটার Yoshiki Watabe, Yasuko Kuramitsu, Shinsuke Sato উনাদের জাস্ট স্যালুট। আমরা সাধারণ অডিয়েন্স চাই এই ধরনের মাথা হ্যাং করা সিরিজ চলতে থাকুন। বাংলাদেশেও গান, নাচানাচি, গুসাগুসি বাদ দিয়ে এই ধরনের স্মার্ট আধুনিক ইউনিক মুভি সিরিজ হোক।
ব্যাক্তিগত রেটিং ৯.৯/১০

সাধারনত, এ ধরনের ‘সারভাইভাল সিরিজ/ গেম সিরিজ’ দেখি না। তবে ভার্সিটি পড়াকালীন এক বন্ধুর ইশারায় 13 Beloved মুভির এবং গতবছর Squid Game ওয়েব সিরিজটা দেখে ফেলি হাইপের কারণে! বলতে দ্বিধা নেই, দুটোই আমার বেশ ভালো লেগেছিল। বছরখানেক পরে এখন আবার জাপানি থ্রিলার ফিকশনধর্মী ওয়েবসিরিজ Alice in Borderland নেটফ্লিক্সে দেখে 13 Beloved এবং ‘স্কুইড গেম’-এর কথা মনে পড়ে গেল!

মরো না হয় মারো সিরিজের একটা গুরুত্বপূর্ণ থিম

Alice in Borderland এর দুইটি সিজন আছে, প্রতিটি সিজনে আটটি করে পর্ব আছে। প্রতিটি পর্বের গড় দৈর্ঘ্য ৪৫ থেকে ৫০ মিনিট। জীবনের জন্য ‘জীবন বাঁচানো’ গেইমটা খেলতেই হবে এবং বাঁচতেই হবে’ এই থিমের উপর নির্মিত ওয়েব সিরিজটি বেশ আকর্ষণীয়, আবেগপ্রবণ, রোমাঞ্চকর এবং মাঝে মাঝে কিছু দৃশ্য মানসিক অস্বস্তি তৈরি করেছে।

সারভাইভাল গেম বা কাহিনী যারা পছন্দ করেন এবং যারা গেমার তাদের সিরিজটি বিশেষ ভাল লাগবে। ‘মরো না হয় মারো’ সিরিজের একটা গুরুত্বপূর্ণ থিম। তবে শুধু ‘মারামারি টাইপ’ সিরিজ এমন মনে করলে ভুল করবেন। এখানে বন্ধুত্ব-প্রেম আছে, আছে নির্মম বাস্তবতা, কান্না ও ক্ষেত্রবিশেষে আশা-আকাঙ্ক্ষার গল্প।

সংঘর্ষ ও রক্তপাত যারা পছন্দ করেন না তাদের বলে রাখা ভালো গল্পের প্রয়োজনেই বেশ সংঘর্ষ-রক্তপাত-মৃত্যু দেখতে হবে আপনাকে। এছাড়াও আছে ১৮+কিছু দৃশ্যও। গল্পের প্লট ভালো, ধীরগতির নয়। মোটামুটি প্রতিটি এপিসোডে ৮০% সময় স্ক্রিনে আটকে রাখতে পারবে আপনাকে। খুব জটিল না হলেও একেবারে সরল কাহিনীও না, মাথায় একটু চাপ পড়বে।

এক নিমিষে বসে দেখার মতো রোমাঞ্চকর সময় কাটানোর জন্য সিরিজটি ভালোই লাগবে। কেউ কেউ অবশ্য ‘স্কুইড গেমের’ সাথে একে তুলনা করার চেষ্টা করেছেন তবে আমার মনে হয়েছে মূল গল্পের ধরন এক হলেও দুটো সিরিজ সম্পূর্ণ দু’ধরনের আবহ দেবে।

Alice in Borderland

Alice in Borderland
Netflix Original
(Live action adaptation from Japanese Manga)
Imdb: 7.8/10
Personal Rating : 9.5/10
Genre: Suspenese, Thriller, Sci-fi, Survial
Rotten Tomatoes :98%

অনেকদিন পর জাপানিজ সিরিজে ফেরত গিয়ে একটা ধাক্কা খেলাম। মেইন লিড Kento Yamazaki আমার বহুদিনের ক্রাশ বলা চলে.. Death Note এ ওর L এর চরিত্রটা দূর্দান্ত ছিল। এছাড়াও মেইন ফিমেইল লিডের সাথে ওর জাপানিজ বিখ্যাত সিনেমা “অরেঞ্জ” যে ফাটাফাটি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর Alice in Borderland থেকে তো বলতে গেলে চোখই সরানো যাচ্ছিল না।

নেশা লেগে যাবে এটা দেখতে গেলে

এনিমে জগৎ থেকে বের হয়ে এসেছি প্রায় বছর দেড়েক। বিশেষ করে ওয়েবটুন আর মাঙ্গার জগতে ঢোকার পর। কত হাজার যে ওয়েবটুন আর ওয়েব নভেল পড়েছি তার ইয়াত্তা নেই উপরন্তু সবগুলোই বলতে গেলে অসাধারণ ছিল। খুন খারাবি, ক্রাইম থ্রিলার আমার বরাবরই ভীষণ পছন্দ। এদিক দিয়ে Alice in borderland চরমভাবে এগিয়ে গেছে।

ব্রুটাল একটা গেইমে পা দিয়ে কয়েকজন কিশোরের ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিজ্ঞতাকেই কেন্দ্র করে এলিস ইন বর্ডারল্যান্ড লাইভ একশন সিরিজ বানানো হয়েছে। শুধুমাত্র এতটুকুই বলব। আর একটুও স্পয়েল করা যাবেনা। প্রত্যেকের অভিনয় ছিল ফাটাফাটি। এতটুকু মিসম্যাচ লক্ষ করার ফুরসত পাইনি। পুরো সিরিজটিই প্রচন্ড এনগ্রোসিং, ভয়াবহ ব্রুটাল আর একইসাথে মগজের খেলা।

নেশা লেগে যাবে এটা দেখতে গেলে। সিজন ওয়ানে মোটে ৮ টা এপিসোড। শেষ করে মাথা বনবন করে ঘুরছে। কবে সেকেন্ড সিজন আসবে কিচ্ছু জানা নেই। হাইপ উঠেছে প্রচুর এই সিরিজ নিয়ে। যদিও সারভাইভাল গেমিং নিয়ে প্রচুর মাঙ্গা আমার পড়া আছে তবু বলব লাইভ একশনে দেখতে অন্যরকম ফিলিং কাজ করেছে পুরোটা সময়। থ্রিলার প্রেমীদের জন্য মাস্ট ওয়াচ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *