দুই বন্ধুর দুরন্ত শৈশব। এটা অনেকটাই বাচ্চাদের বড় হয়ে ওঠার গল্প

ভাই, মালায়ালাম যাই দেখি না কেন, মনে হয় ওই বছর ভারত থেকে অস্কারে কোন মুভি গিয়েছিলো? কোন মুভি এই ফিল্মকে ছাড়িয়ে গেছে। অস্কারে সব দেশ নিজেদের সংস্কৃতিকে তুলে আনা মানবিক গল্পের মুভিকেই নির্বাচন করার চেষ্টা করে, যেখানে দেশ, জাতি ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই রিলেট করতে পারবে। এরকম দুর্ধর্ষ সব ফিল্ম দেখে অবাক হয়ে যাই কীভাবে এগুলা আরও বেশি প্রচারণা পায় না?

ভারতে এই একমাত্র ইন্ডাস্ট্রি যেখানকার ফিল্ম নিয়ে আমার এই অভিমত, তামিল; তেলেগু বেশি প্রচারণা পেলেও আমার ওগুলো এতোটা পোষায় না।
সেদিন Moothon দেখলাম, এতোটাই থ হয়ে গেছি, রিভিউ লিখা আর হয় নি। আজ দেখলাম Parava। পরিচালনায় সোবিন শাহির, যে তার অভিনয়ের জন্য পরিচিত, Kumbalangi Nights এ দেখেছিলাম।

এই লোকের ১ম পরিচালিত এই মুভি প্রযোজনা করেছেন আরেক মালায়ালাম ফিল্ম কিংবদন্তী আনোয়ার রশিদ। কাস্ট আরও গজব – দুলকার সালমান, শেইন নিগাম! শুধু ফাহাদ ফাসিলই বাকি ছিলো। আমি বেশি মালায়ালাম ফিল্ম দেখিনি, যা দেখেছি তার মাঝে এদেরকেই চিনি। নিশ্চয়ই আরও পরিচিত মুখ আছে।

পারাভার কাঠামোও অদ্ভুত। শুরু দেখে বোঝা যায় না, ভেতরে কতরকম ডালপালা আছে। ওই অঞ্চলের প্রসিদ্ধ কবুতর প্রতিযোগিতা থেকে অকপটে এলাকার সাম্প্রদায়িকতা, ভ্রাতৃত্ববোধ দেখানো,মুসলিম ভাইরা মিলে পরটা গরুর মাংস খাওয়া। বোন লাঞ্ছিত হয়েছে শুনে পাড়ার ভাইদের এক হয়ে পিটিয়ে আসা, অনেককিছুই একই বছরের Angamaly Diaries কে মনে করায়।

প্রথম প্রেমে পড়া, বিরহ, এক টিকেটে দুই ছবি দেখতে গিয়ে ধরা খাওয়া

Parava আরও ফিলগুড, কারণ এতো তারকার মাঝেও এখানে আসল হিরো দুই কিশোর। স্কুল পড়ুয়া ইচাপি আর হাসিব- কোচির মাটাঞ্চারি এলাকায় এই দুই বন্ধুর দুরন্ত শৈশব। শৈশব বলছি, কারণ এটা অনেকটাই Coming-of-age সিনেমা, বাচ্চাদের বড় হয়ে ওঠার গল্প। প্রথম প্রেমে পড়া, বিরহ, এক টিকেটে দুই ছবি দেখতে গিয়ে ধরা খাওয়া, বাবার বকুনি – সবই আছে!

এসবের মাঝেও এলাকার একটা অন্ধকার অতীত আছে, যার মূলে ইচাপির বড় ভাই শেইনের ঘরকুনে হয়ে থাকার কারণ জড়িত। এন্ট্রি হয় দুলকার সালমানের। মুভির এনার্জিই যেন বদলে যায়। মাত্র ৩০ মিনিট থাকলেও দুলকারের তারকাখ্যাতি আর পর্দা কাপানোর শক্তিতে আগের সবকিছু যেন ভুলে যাই। শেইন আর দুলকার, সাথে পরিচালক শোবিন নিজেও ছোট চরিত্রে আছেন। এলাকার ছেলেপেলের অভ্যন্তরীণ দাঙ্গাফাসাদের অ্যাকশন কোরিয়োগ্রাফিও আঙ্গামালিজের মতো।

কিছুদিন আগে রিভিউ দেয়া Mayanadhi এর সঙ্গীত পরিচালক রেক্স ভিজয়াজান এর অসাধারণ আবহ সঙ্গীতের কামালে থার্ড অ্যাক্ট প্রায় এপিক। বাণিজ্যিক সিনেমা আর আর্ট ফিল্ম পুরা মাখামাখি। তবে আড়াই ঘন্টায় দুইটা আলাদা গল্পের মেশটা আরও ভালো হতে পারতো। মাঝে কিছুটা খেই হারিয়ে ফেলেছিলাম। আজকাল ৩-৪ পর্বের ওয়েবসিরিজ যেই বিনোদন দেয়, তাতে এধরণের সিনেমা সিরিজের আদলে আসলে আরও সহজ হতো আমার জন্য।

বাংলাদেশে ফারুকি ভাইবেরাদারদের টেলিফিল্মগুলোতে একদা যেরকম গল্প দেখতাম, Parava সেটাই মনে করালো। এলাকাভিত্তিক সিনেমার মজা পরিপূর্ণভাবে দেখতে চাইলে এটা মিস দিয়েন না। ইংরেজি সাবটাইটেলের মান সুবিধার লাগেনি। পারলে বাংলা সাবে দেইখেন, যদিও জানিনা, অনুবাদ কেমন হয়েছে।
আমার গ্রেডিংঃ B+

Assassins Creed গেম, বাস্তব ইতিহাস এবং সিনেমা

যেকোন লেখার প্রথম লাইনকে কিঞ্চিত অদ্ভুত হতে হয়, পাঠকের মনোযোগ পেতে। এক্ষেত্রে আমি মনস্থির করতে পারিনি। কারন এক্ষেত্রে দুই ধারার দর্শকের উদ্দেশ্য লিখছি, যারা গেম খেলেছেন এবং যারা খেলেননি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি ভূমিকা বাদ দিয়ে সোজা আলোচনায় চলে যেতে। যারা সিনেমা দেখে ভাবছেন, এত সব কী— তাঁদের কনফিউশন কিঞ্চিৎ দূর করবে বলে আমার বিশ্বাস।

ইতিহাসঃ সবার আগে জানা দরকার, কারা এই অ্যাসাসিন? এই অ্যাসাসিনরা আদতে ছিলো কিনা। ইতিহাস থেকে জানা যায় অ্যাসাসিনদের অর্ডার আসলেই ছিলো এবং ১১ শতকে পারস্যে দাপট দেখিয়ে বেড়িয়েছে। তাঁদের খুনের তালিকায় ছিলো প্রধাণত শত্রু পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা, বিভিন্ন সুলতান, উজির, নাজির ইত্যাদি। বিশেষ করে ক্রুসেডাররা তাঁদের জমের মতো ভয় পেতো। অ্যাসাসিনদের সাথে ল্যাটিন চার্চের ক্রুসেডারদের বিরোধ ইতিহাস বিখ্যাত।

ধারণা করা হয় প্রথম ক্রুসেডের পর অ্যাসাসিনদের সিক্রেট অর্ডার গড়ে ওঠে হাসান-ই-সাবাহ এর হাত ধরে। খ্রিষ্টান ক্রুসেডাররা তখন হানাদার। মুসলমানদের থেকে তাঁদের তথাকথিত পবিত্র ভূমি কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু হাসান-ই-সাবার লক্ষ্য কেবল ধর্মীয় কিনা এ ব্যপারে সন্দেহ আছে।
খ্রিষ্টানদের সাথে তো বটেই, তাঁর অ্যাসাসিন্স অর্ডার লড়েছে তৎকালীন মুসলমানদের সাথেও।

সালাহ-আদ-দিনের সাথে অ্যাসাসিনদের বিবাদ লেগেই ছিলো

মুসলিমদের ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সালাহ-আদ-দিনের সাথে অ্যাসাসিনদের বিবাদ লেগেই ছিলো। তবে অ্যাসাসিনরা ছিলো দারুণ দক্ষ। মুভিতে যেমন দেখেছেন বা দেখবেন হয়ত তেমনই। ওই সময়ের জেসন বোর্নেরা, তবে বাস্তব। সংখ্যায় তাঁদের সংখ্যা কম হলেও সালাহ-আদ-দিনকে দৌড়ের উপর রেখেছিলো এবং সালাহ-আদ-দিন কখনোই অ্যাসাসিনদের পরাজিত করতে পারেনি।

কথিত আছে, একবার সালাহ-আদ-দিনের নিজের তাবুতে বিষমাখা কেক অথবা রক্তমাখা ছুরি রেখে আসে অ্যাসাসিনরা, উদ্দেশ্য সাবধান করে দেয়া, “বেশী বেড়ো না সালাহদিন, যেকোন সময় তোমাকে ফেলে দিতে পারি। পরবর্তীতে অ্যাসাসিনরা এবং সালাহ-আদ-দিন শান্তি চুক্তি করেন এবং তাঁদের কমন এনেমি ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে লাগতে মনোনিবেশ করেন।

ছিলো টেম্পলার বা নাইটস টেম্পলাররাও, তাঁরাও ইতিহাস স্বীকৃত। ক্রুসেডের সময় গড়ে ওঠে এবং চার্চ তথা খ্রিষ্টান অর্থায়নে মিলিটারি শাসন করে বেরিয়েছে। অ্যাসাসিনরা ভালো ছিলো নাকি ক্রুসেডার টেম্পলারেরা, এটা আলোচনার বিষয় না আসলে। সময়টা ছিলো ধর্মভিত্তিক যুদ্ধের এবং দু’পক্ষের হাতেই লেগে আছে বহু মানুষের রক্ত। ভালোলাগা বা মন্দলাগা থেকে আমরা কেউকে ভালো বা খারাপ বানিয়ে দিতে পারি না।

ফ্রি-উইল বা স্বাধীন ইচ্ছেশক্তি বজায় রেখে শান্তি অর্জন

গেমঃ Assassins Creed গেম সিরিজ বাস্তবের অ্যাসাসিনদের নিয়ে হলেও এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আছে। যেমন, গেমে অ্যাসাসিনদের লড়ে যাওয়ার কারণ দেখানো হয় “ফ্রি-উইল বা স্বাধীন ইচ্ছেশক্তি বজায় রেখে শান্তি অর্জন”, অন্যদিকে টেম্পলারদের কারণ ছিলো, “নিয়ন্ত্রণ এবং কঠোর শাসনের মাধ্যমে শান্তি অর্জন।”

গেম-এ দেখানো হয় অ্যাসাসিন এবং ক্রুসেডার টেম্পলারদের বিরোধ কেবল তাঁর পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতেই শেষ হয়ে যায়নি, চলেছে যুগের পর যুগ, বিভিন্ন ইতিহাসে বিভিন্ন যুদ্ধে। একটা গোপন যুদ্ধ, দুই গোপন সংগঠনের মাঝে। একদল শুভ বুদ্ধি আর মুক্ত চিন্তার বাহক আর আরেকদল কড়া শাসন আর ভয়ের প্রতীক।

আরোও দেখুন>>> 

এবং তাঁরা দুই দলই রূপকথার “স্বর্গের আপেল” খুঁজছে। জিনিসটা গোলাকার একটা সোনালী বল। কথিত আছে এই আপেল এর পাওয়ার আছে যে শক্তি ব্যবহার করে এক পক্ষ অন্য পক্ষের উপর করায়ত্ব স্থাপন করতে পারবে। এইখানে ব্যপারটা ফ্যান্টাসি মনে হলেও, আসলে সাইফাই। কেন সাইফাই তা বললে গেম স্পয়লার হয়ে যাবে। তো দুপক্ষই এই আপেল এর অধিকার গ্রহণ করার উদ্দেশ্যে শতাব্দীর পর শতাব্দী লড়ে যাচ্ছে।

এইটুকু গেম এর ফিকশন আসলে। এছাড়া বাদবাকি সবকিছু বাস্তব ইতিহাস কেন্দ্রিক। গেম ডেভেলোপাররা চেয়েছিলেন ইতিহাসভিত্তিক গেম বানাতে এবং তাঁরা সফল। গেমগুলোতে লিওনার্দো ডা ভিঞ্চি থেকে শুরু করে অ্যামেরিকার প্রবাদ পুরুষ জর্জ ওয়াশিংটন পর্যন্ত এসেছেন। আরো এসেছে বিভিন্ন যুদ্ধ, বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন শাসক, বিভিন্ন অ্যাসাসিনেশনের ঘটনা এবং সবগুলোই সত্যিকারের ইতিহাস থেকে।

জানো, আমি এই বিল্ডিং এর আগায় বেঁয়ে উঠেছি

যার ফলে, Assassins Creed গেম সিরিজ এর গল্প আসলে বিশাআআআআল এবং কিছুটা বোরিংও বটে আমি যদিও ভালোবাসি। আর গেমপ্লে এবং গেমের ওয়ার্ল্ডও অসাধারণ। গেমের শহরগুলি বাস্তবের শহর। অনেক পোস্ট দেখেছি যেখানে AC গেমার ওই শহরের একই বিল্ডিং এর নিচে গিয়ে ছবি তুলেছে, ক্যাপশন দিয়েছে, “জানো, আমি এই বিল্ডিং এর আগায় বেঁয়ে উঠেছি!”

আসলেই তাই। গেমের মধ্যে প্রোটাগনিস্ট এর চরিত্রে কেবল ধুন্ধুমার মারপিট করতে হয় না, এক্সপ্লোর করতে হয় দুনিয়াকে। অসামাজিকের মতো দ্রূত দৌড়াচ্ছেন? হুট করে দেয়াল বেঁয়ে উঠছেন? পাশ থেকে গেমের লোকজন বলে উঠবে, “শালায় পাগল নাকি?” “দেখ দেখ কী করে, কই বাইয়া উঠে।” Assassins Creed সিরিজ বাস্তবিকই কেবল গেম না, একটা এক্সপেরিএন্স।

সিনেমাঃ বাংলায় কিছু প্রবাদ আছে। যেমন, ‘টাক বেলতলায় একবারই যায়। অথবা কাছাকাছি কিন্তু ভিন্ন প্রসঙ্গে, ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়। তবুও গেম-টু-মুভি মেকাররা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিলো না। Assassins Creed এর ক্ষেত্রেও তাই। অরিজিনাল স্টোরি ফলো না করে কেবল মূল থিম রেখে সম্পূর্ণ নতুন কিছু চরিত্র দিয়ে সিনেমা বানিয়েছে নতুন এক গল্পে। এবং জোড়াতালি দেয়ার চেষ্টা করে, হয়েছে চরমভাবে ব্যর্থ।

যে অ্যাসাসিন ক্রিড জীবনেও খেলেনি, তাঁর কাছে মুভিটাই একটা জবরজং ধোঁয়াশা। যে কথাগুলো ব্যপক গুরুত্ব সহকারে বলা হচ্ছিলো, এগুলো একজন গেমার বাদে অন্য কারও কাছে আবেদন রাখবে না। যেমন, “Leap of faith” এর সময়টাতে আমার গায়ের সবগুলো রোম খাঁড়া হয়ে গিয়েছিলো উত্তেজনা আর নস্টালজিয়ায়, গেম না খেলা দর্শকের কাছে ব্যপারটা নেহাতই একটা লম্ফঝম্ফ মনে হবে।

দর্শকের বোঝার উপায় নেই সিনেমার আসলে কাহিনীটা কী

অ্যাপল অফ ইডেন, টেম্পলার, অ্যাসাসিন বিরোধ সিনেমায় কেবল ছুঁইয়ে গেছে না ছোঁয়ার মতো। দর্শকের বোঝার উপায় নেই সিনেমার আসলে কাহিনীটা কী! অন্য টেকনিকাল ব্যপার একদম বাদ দিচ্ছি না হয়। সিনেমার উদ্দেশ্যই যদি সফল না হয়, তবে সিনেমা বানিয়ে লাভটা কী?

আবার AC গেম সিরিজ ভক্ত হিসেবে পরিবর্তিত গল্প এবং স্টাইল নিয়ে সন্তষ্ট নই, বিশেষ করে সাউন্ডট্রাক এবং OST এর বারোটা বাজিয়েছে। যে AC খেলেনাই, সেও AC-তে জ্যাসপার কিড এর সাউন্ডট্রাক শুনেছে। আর সবথেকে বড় কথা, যদি সিনেমা বানাতেই হয়, সোর্স ম্যাটেরিয়াল অবজ্ঞা করার কী দরকার ছিলো?

ইতিহাসে প্রচুর অ্যাডাপশন হয়েছে সিনেমায়। এবং যেগুলো সোর্স ম্যাটেরিয়াল ফলো করেছে, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে সফল হয়েছে। কারণ আছে, সোর্স ম্যাটেরিয়ালকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের মতো পরিবর্তন করে গ্রেট ফিল্ম বানাতে কুব্রিকের লেভেলের হতে হয়। Assassins Creed এর পরিচালক বা রাইটার সেই লেভেলে নন। নিজেদের দৌড় বোঝা উচিৎ ছিলো।

আরেকটা ব্যপার উল্লেখ করার মতো। সাধারণত একটা গেমে কাট-সিন কতক্ষণ থাকে সব মিলিয়ে? ১০/২০ মিনিট? অ্যাসাসিন্স ক্রিড সিরিজে ৯ টা গেম আছে। সবগুলো গড় করলে প্রত্যেক গেমে কেবল কাট-সিনই ৩ ঘণ্টা করে। ইন এ সেন্স, AC মুভি আছে। একটা না, ৯ টা। নতুন গল্প দিয়ে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিটের গোঁজামিল দেয়ার প্রয়াস হতাশাজনক। সিনেমার একমাত্র ভালো দিক মাইকেল ফ্যাসবেন্ডারের অভিনয়। দারুণ একজন অ্যাসাসিন হতে পারতো সে সন্দেহ নেই।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *